সর্বশেষ আপডেট

3/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

কারাগারের বিপুলসংখ্যক মাদকাসক্ত বন্দির নিরাময়ে আলাদাভাবে চিকিৎসার উদ্যোগ

 কারাগারের বিপুলসংখ্যক মাদকাসক্ত বন্দির নিরাময়ে আলাদাভাবে চিকিৎসার উদ্যোগ

দেশের কারাগারগুলোতে শত শত মাদকাসক্ত বন্দি থাকলেও তাদের চিকিৎসায় আলাদা কোনো নিরাময় কেন্দ্র নেই। কারা হাসপাতালগুলোতেই সেব মাদকাসক্তের চিকিৎসা দেয়া হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। আলাদা ব্যবস্থা না থাকায় বরং পুরনো মাদকাসক্ত বন্দিদের মাধ্যমে কারা হাসপাতাল ও কারা ওয়ার্ডেও নতুন বন্দি মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মাদকাসক্ত কারাবন্দিদের জন্য আলাদাভাবে চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেজন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা নিরাময় কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী দেশের কারাগারগুলোতে ২ হাজার ৩৪০ জন মাদকাসক্ত বন্দি রয়েছে। তাছাড়া মাদক মামলায় আটক রয়েছে প্রায় ২১ হাজার বন্দি। যাদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত। এমন অবস্থায় কারাগারগুলোতে মাদকাসক্তের সংখ্যা কমিয়ে আনতে ইতোমধ্যে দেশের প্রতিটি কারা হাসপাতালে মাদকাসক্ত আসামিদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড তৈরির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিশেষ ওই ওয়ার্ডে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র হিসেবে কার্যক্রম চালানো হবে। ইতোমধ্যে ওই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, কারাগারে বন্দি মাদকাসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদকাসক্ত বন্দিদের চিকিৎসার জন্য নতুন ৫০ শয্যা অন্তর্ভুক্ত করে ৩০০ শয্যার কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল ও বন্দি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া নেশা থেকে নিবৃত্ত করতে কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্তৃপক্ষএকটি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। কিন্তু স্থায়ী চিকিৎসা ব্যবস্থা না পেয়ে জামিনে বেরিয়ে পুনরায় তারা সর্বনাশা মাদকাসক্ত হচ্ছে। তবে মাদকাসক্তদের জন্য কারাগারের হাসপাতালে নির্ধারিত বেড আছে, সেখানে তাদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। আগে কারাগারে থাকা নেশাগ্রস্ত হাজতি ও কয়েদিদের সংশ্নিষ্ট জেলা ও বিভাগীয় শহরের সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হতো। এমনকি উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করানো হতো। কিন্তু হাসপাতালে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় তাদের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র আরো জানায়, দেশের ৬৮টি কারাগারে প্রায় ৮৭ হাজার বন্দি রয়েছে। তার মধ্যে ২৩ শতাংশই মাদক মামলায় বন্দি। আবার অনেকের আদালত থেকে সাজা হয়েছে। তারা কারাগারে থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করে। মাদকাসক্তরা মাদক না পাওয়ায় কারারক্ষীদের সাথে বাজে আচরণ করে। অন্য বন্দিদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। ওই বন্দিদের সার্বক্ষণিক নজরে রাখতে হয়। যাতে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে। তাদের মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসার জন্য কারাগারের মধ্যে আলাদা চিকিৎসক থাকলেও তা সংখ্যায় কম। মূলত এই ঘাটতি রোধ করতেই শিগগির মাদকসেবীদের নিরাময়ের জন্য আলাদা চিকিৎসক ও যথাযথ কাউন্সেলিং করার উদ্যোগ নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এদিকে চলতি বছরের আগস্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১১তম সভায় কারাগারে বন্দি মাদকাসক্তদের চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই সভায় কারাবন্দি মাদকাসক্তদের সার্বিক চিত্রও উঠে আসে। সেখানে কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের ৫৯টি কারাগারে মাদকাসক্ত বন্দিদের জন্য কারাগারগুলোর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাদকাসক্তি নিরাময় ইউনিট চালু রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব কারাগারে এ ইউনিট চালু করা হবে। তাছাড়া জেলা প্রশাসন ও কারা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২৮টি কারাগারে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি জানান, মাদক-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত এবং সাজাপ্রাপ্তদের জন্য আলাদা চিকিৎসা ওয়ার্ড করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় এখন এ বিষয়ে তাদের কার্যক্রম হাতে নেবে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, কারাগারে মাদকাসক্ত বন্দির নিরাময়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নতুন উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে। মাদকাসক্ত বন্দি মুক্তি পেয়ে পুনরায় যাতে মাদকাসক্ত না হয় সেজন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল ও বন্দি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সেটি সম্পন্ন হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক উন্নত চিকিৎসা দেয়া সহজ হবে।


https://www.dainikdristipat.com/?p=341019

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ