বরিশাল কারাগারে এবার চালু হলো জেন্টস পারলার প্রশিক্ষণকেন্দ্র
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় কারাগারের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির উদ্যোগে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় কারাগারের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির উদ্যোগে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীদের জন্য চালু হয়েছে জেন্টস পারলার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কারাবন্দীরা মুক্তির পর যেন পুনরায় অপরাধে না জড়িয়ে রোজগার করে সংসারের হাল ধরতে পারেন, সে জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রতি ৩ মাসে ২০ জন বন্দী এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
আজ বুধবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় কারাগারের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির উদ্যোগে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগের কারাগারগুলোয় জেন্টস পারলার প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ এটাই প্রথম।
আজ সকাল ১০টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদকবিরোধী আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদেন জেলা প্রশাসক। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার রত্না রায়। এর আগে ফিতা কেটে এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কারাগারের অভ্যন্তরে অনেক সময় গোপনে মাদক সরবরাহের খবর শোনা যায়। এই প্রবণতাকে কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। কারাগারগুলো যেন প্রকৃতপক্ষে সংশোধনাগারে পরিণত করা যায়, সে জন্য কারা প্রশাসনকে যেমন সজাগ থাকতে হবে, তেমনি এখানে যাঁরা বন্দী আছেন, তাঁদেরও নতুন করে জীবন সাজানোর বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে। কারাগারে যেন আপনারা দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন ও মুক্ত হয়ে সংসারের হাল ধরেসমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেন, সে জন্য নানা ট্রেডে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো কাজে লাগিয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলুন। মুক্ত হওয়ার পর প্রয়োজনে আপনাদের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর জন্য উপকরণ প্রয়োজন, সেসব দিয়েও আপনাদের সহায়তা করা হবে।’
জেলা সমাজসেবা বিভাগের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনায় অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির আওতায় সেলাই, তাঁত, নকশি কাঁথা, কার্পেন্টার, বাঁশ-বেতসহ বেশ কয়েকটি ট্রেডে প্রতি মাসে ২৫০ জন বন্দীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ধর্মীয় শিক্ষা, সাক্ষরতা কর্মসূচিও চলমান। এখন নতুন করে জেন্টস পারলার প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হলো। এ জন্য নতুন একটি শেড নির্মাণ করে প্রশিক্ষণের সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। প্রতি ৩ মাসে ২০ জন কারাবন্দী এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। ৩০ বছর দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন কয়েদিকে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
সাজ্জাদ পারভেজ জানান, কারাবন্দীরা মুক্ত হওয়ার পর তাঁদের প্রশিক্ষণের দক্ষতাকে যেন কাজে লাগাতে পারেন, সে জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহায়তাসামগ্রী দেওয়া হয়। গত বছর মুক্তি পাওয়া এমন ১৬ জন নারী ও পুরুষ বন্দীকে নানা সরঞ্জাম সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সবাই এখন মুক্ত জীবনে দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নিজ নিজ সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রুম্পা সিকদার, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ড, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল মামুন তালুকদার, জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ