আদালত অবমাননা
কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ নার্সের হয়রানিমূলক বদলি ও আদালত অবমাননার অভিযোগে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন একজন ডিপ্লোমা নার্স।
তার নাম আফজালুর রহমান। তিনি বর্তমানে খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত রয়েছেন। তার পক্ষে সম্প্রতি লিগ্যাল নোটিশ দেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. খন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হুদা।যাদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে তারা হলেন : আইজি (প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক, অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন্স) কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান, ডিআইজি (প্রিজন্স) সুরাইয়া আক্তার, এআইজি প্রিজন্স মাইন উদ্দিন ভ‚ঁইয়া, নরসিংদী জেলা কারাগারের জেলার রিজিয়া বেগম ও সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ শফিউল আলম। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করারও অনুমতি চেয়েছেন ডিপ্লোমা নার্স আফজালুর রহমান।
এ বিষয়ে আফজালুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, কারা বিভাগে ডিপ্লোমা নার্স ও ফার্মাসিস্টরা সব সময় পদোন্নতি বঞ্চিত অবস্থায় থাকেন। অন্য কর্মকর্তারা নিয়মিত পদোন্নতি পেলেও এই দুই পদে কর্মরতরা পদোন্নতি পান না। তাই সবার জন্য পদোন্নতির পথ উš§ুক্ত করার জন্য ডিপ্লোমা নার্স ও ফার্মাসিস্টদের পক্ষে আমি ২০১৭ সালে আদালতে একটি রিট করি। রিটের বিচার কার্যক্রম যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই আমাকে একের পর এক হয়রানিমূলক বদলি করা হচ্ছে। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল -এই তিন বছরে আমাকে আটবার বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি আদালত অবমাননার শামিল। তাই আমি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে - এপ্রিল লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। শুধু তাই নয়, হয়রানির প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে ৩ এপ্রিল সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিবের কাছে আবেদন করি।আফজালুর রহমান আরও বলেন, আমার স্ত্রী ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাই আমি আমাকে ঢাকা বা এর আশপাশে বদলি করতে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই। স্বামী-স্ত্রী সরকারি চাকরিজীবী হলে তাদের একসঙ্গে বা পাশাপাশি কর্মরত রাখতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সার্কুলার রয়েছে। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা এবং আমার অনুরোধকে অগ্রাহ্য করে আমাকে বারবার দূরবর্তী স্থানে বদলি করা হচ্ছে। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ২০১৬ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার বকশিবাজার থেকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়। ওই বছর সব কারাবন্দিকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আফজালুর রহমানকে ২০১৮ সালে চুয়াডাঙ্গা থেকে বকশিবাজার পুরাতন কারাগারে বদলি করা হয়। অথচ সেখানে কোনো বন্দি ছিল না। এমনকি ডিপ্লোমা নার্সের কোনো পদও ছিল না। সেখানে ২০২০ সালের ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত তাকে রাখা হয়। এরপর একের পর এক হয়রানিমূলক বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন্স) কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আফজালুর রহমান যে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন সেটির কথা শুনেছি। তিনি ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। নোটিশটি এখনো দেখিনি। নোটিশ দেখার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যে কারও অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা কতটুকু তা দেখার বিষয়। আমার কাছে মনে হয়, কর্তৃপক্ষ কখনো কারও বিরুদ্ধে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয় না। আর কেউ যদি মনে করে তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে তাহলে অবশ্যই তার আদালতে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। নরসিংদী জেলা কারাগারের জেলার রিজিয়া বেগম বলেন, কারা বিভাগে কর্মরত থেকে আফজালুর রহমান বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে লিপ্ত হন। আমার অধীনে কর্মরত থাকার সময় তার অপকর্মের বিষয়টি অমি উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধেও নোটিশ পাঠিয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ