হাজতিকে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনকে স্ট্যান্ড রিলিজ
গাইবান্ধা জেলা কারাগারে প্রধান কারারক্ষী দ্বারা এক নারী হাজতিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান কারারক্ষীসহ দুই মহিলা কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে রংপুর বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ আদেশ দেওয়া হয়। বদলিকৃতরা হলেন- জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম ও কারারক্ষী সাবানা বেগম ও কারারক্ষী তাহমিনা খাতুন। আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে, কারারক্ষী সাবানা বেগমকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে ও তহমিনা খাতুনকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে বদলিকৃতদের নতুন কর্মস্থলে (কারাগারে) যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের স্বীকার ওই নারী হাজতি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। তিনি গোবিন্দগঞ্জ থানার মাদক মামলার আসামি এবং পাঁচ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন সীমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। ঘটনা জানাজানির ভয়ে তারা কারাগারের ভেতরে সীমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। এসব নির্যাতনের কথা ভুক্তভোগী হাজতি জেলসুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বললে, প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম তাকে ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা, কারারক্ষী সাবানা বেগমসহ কয়েকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘অভিযোগকারী ওই নারী হাজতি খুবই হিংস্র মানসিকতার। বিভিন্ন সময় তিনি বন্দি হাজতিদের নানাভাবে নির্যাতন করে কারাগারে প্রভাব বিস্তার করতেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তিনি হাজতিদের মারপিট পর্যন্ত করেছেন। এসব কারণে আগেও তাকে দুইবার অন্য কারাগারে বদলি করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন তিনি তার থাকার কক্ষের কাপড় রাখার জন্য অতিরিক্ত একটি র্যাক দখল করেন। সেটি খালি করতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দুই মহিলা কারারক্ষীকে অপদস্ত করেন। পরে অন্য হাজতিদের সহযোগিতায় ওই দুই কারারক্ষীকে উদ্ধার করা হয়। তার দাবি, কারারক্ষীদের অপদস্ত করার ঘটনা থেকে নিজেকে বাঁচাতেই তিনি মিথ্যে তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছেন।’
তাদের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাবেদ মেহেদী সমকালকে বলেন, অভিযোগের পরই কারারক্ষী তাহমিনা খাতুনকে দিনাজপুর কারাগারে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর কারা উপ-মহাপরিদর্শক এক চিঠিতে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম ও কারারক্ষী সাবানা বেগমকে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।’
0 মন্তব্যসমূহ