যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই দল কয়েদির মধ্যে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) কারাগারের নিউ জেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ সময় চার-পাঁচজন হাজতি আহত হয়েছেন। তাদের ঠেকাতে গিয়ে দুই কাররক্ষীও জখম হন। পরবর্তীতে হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।
তবে কারাগারের একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অসংখ্য দর্শনার্থী যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের দেখা করার ঘরের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। দর্শনার্থীদের দ্রুত বাইরে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে সকল কারারক্ষী যে যার অবস্থায় ছিলেন তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। এতে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। কেউ কেউ বলতে থাকেন আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারাভ্যন্তরের নিউ জেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও আরেক সন্ত্রাসী সম্রাটের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। শেষমেশ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুই কারারক্ষী জখম হয়েছেন। তাদেরকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিক কারা কর্তৃপক্ষ জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে।
অপর একটি সূত্র দাবি করেছে, কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুই কারারক্ষী ও ছয়-সাতজন হাজতিকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা আশঙ্কামুক্ত ও সুস্থ রয়েছেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, ঘটনাটি সামান্য। তবে আকস্মিকভাবে তাদের একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়।
তিনি বলেন, মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগী কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাইপো রাকিব অন্যতম। এদের দুটি গ্রুপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল। যা কারাগারের ভেতরে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।তিনি আরও বলেন, কারারক্ষীদের ওপর হামলা চালানো হয়নি। মূলত তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তারা।
0 মন্তব্যসমূহ