সর্বশেষ আপডেট

3/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

খুলনা জেলা কারাগারধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি, একমাত্র চিকিৎসকের পদও ফাঁকা

খুলনা জেলা কারাগার
ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি, একমাত্র চিকিৎসকের পদও ফাঁকা
ধারণক্ষমতার-দ্বিগুণ-বন্দি-একমাত্র-চিকিৎসকের-পদও-ফাঁকাখুলনা জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি রয়েছে, রয়েছে চিকিৎসা সেবা সংকটও।

বর্তমানে এ কারাগারে বন্দি রয়েছেন এক হাজার ৩৪৩ জন। অথচ কারাগারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৬৭৮ জন। কোনো কোনো দিন সেখানে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বন্দিও থাকেন।

ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি খুলনা জেলা কারাগারে। তাদের চিকিৎসার জন্য একটি চিকিৎসকের পদ থাকলেও, এখন ওই পদে কেউই নেই। শুধু একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে বন্দিদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, ফাঁকা থাকা পদে একজন চিকিৎসক পদায়নের চেষ্টা চলছে। আর বন্দিদের সংখ্যা ও কারাাগারের জনবলসহ অন্য বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের।

বর্তমানে এ কারাগারে বন্দি রয়েছেন এক হাজার ৩৪৩ জন। অথচ কারাগারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৬৭৮ জন। কোনো কোনো দিন সেখানে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বন্দিও থাকেন।

কারাগারের জনবল বিবরণী থেকে জানা যায়, সেখানে ২৭৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি পদ শূন্য। কারাগারের হাসপাতালে একজন করে পদ রয়েছে সহকারী সার্জন, মহিলা ডিপ্লোমা নার্স, ফার্মাসিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট ও ল্যাব টেকনেশিয়ানের।

তবে বর্তমানে হাসপাতালের সহকারী সার্জন, মহিলা ডিপ্লোমা নার্স, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট ও ল্যাব টেকনেশিয়ানের পদগুলো শূন্য রয়েছে। শুধু ফার্মাসিস্ট একাই সর্বক্ষণিক হাসপাতালটি পরিচালনা করছেন।

খুলনা জেলা কারাগারের হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জন বন্দি চিকিৎসা নিতে আসেন। এছাড়া আন্তঃবিভাগে সর্বোচ্চ ২৫ জন রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে জটিল পর্যায়ে গেলে রোগীদের রেফার্ড করে খুলনা জেনারেল হাসপাতাল বা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (কেএমসিএইচ) পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, কারাগারের হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানের চিকিৎসসহ অন্যদের নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষমতা ওই মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন অধিদপ্তরের। তবে দীর্ঘদিন ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। এ কারণে জেলা কারাগারগুলোতে সহকারী সার্জন পদে একজন চিকিৎসককে পদায়ন করা হচ্ছে সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে।

খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দীর্ঘদিন চিকিৎসক নিয়োগ না হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে কারাগারে চিকিৎসক পদায়ন করা হচ্ছে।’

ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি, একমাত্র চিকিৎসকের পদও ফাঁকা
তিনি বলেন, ‘খুলনা জেলা কারাগারে একজন সহকারী সার্জনের পদ রয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ডা. মনিকা রানি নামের এক চিকিৎসককে সেখানে পদায়ন করা হয়েছিল। কয়েকদিন আগে তিনি বদলি হয়েছেন। এখন ওই পদটি শূন্য আছে। সেখানে অন্য চিকিৎসক পদায়নের চেষ্টা চলছে।’

হাসপাতাল শাখার অন্য জনবলের ব্যাপারে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমরা শুধু সহকারী সার্জনের পদে এক চিকিৎসককে সেখানে পদায়ন করছি। অন্য জনবল দেখার দায়িত্ব সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।’

খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. রফিকুল কাদের বলেন, ‘বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসা কারাগারের হাসপাতালে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বড় কোনো অসুখ হলে পাশের জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এতে অসুবিধা হচ্ছে না। আইন অনুসারে কারাগারের চিফ মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন জেলা সিভিল সার্জন। কোনো সমস্যা হলে তো তিনি আছেন।’

খুলনা জেলা কারাগারের বন্দি স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে আসা লুৎফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই পাঁচ দিন আগে কারাগেরে গেছে। সে এলাকায় মারামারি করায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

‘মারধরের ফলে তার পিঠে কাটা দাগ রয়েছ, শরীরে ব্যথাও আছে, পায়ে আঘাত পাওয়ায় ঠিক মত হাঁটতে পারছে না। তবে কারাগারে গিয়ে সে কোনো চিকিৎসা পায়নি। তার পা ভেঙে গেছে কি না তা পরীক্ষাও করা হয়নি।’

কাদিরুল নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ফুফা কারাগারে রয়েছে। কয়েকদিন ধরে তার জ্বর হয়েছে। আজ দেখা করতে আসলে সে জানালো, জ্বর ভালো হচ্ছে না। এক সপ্তাহ ধরে ওষুধ খাচ্ছেন তবুও জ্বর নামছে না।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলার সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংবিধান বলেন আর আমাদের মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র বলেন, সব স্থানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সব নাগরিককে শান্তিপূর্ণ বাসবাসের নিশ্চিয়তা ও চিকিৎসা সেবা দেয়ার দায় দায়িত্ব সরকারের। তবে কারাগারে বন্দিরা যদি সঠিক চিকিৎসা না পান সেখান মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ